মানুষ যখন বিভিন্ন ভূ-প্রাকৃতিক ঘটনার পিছনের কারণগুলো জানত না, তখন তারা এই ভুপ্রাকৃতিক ঘটনাগুলো ব্যাখ্যা করার জন্য নানা ধরনের লোককাহিনি গড়ে তুলত। ভূমিকম্প যেহেতু কোনোরকম পূর্বাভাস না দিয়ে হঠাৎ করে আঘাত করত তাই পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই ভূমিকম্প নিয়ে নানা ধরনের লোক কাহিনী প্রচলিত আছে। যেমন আমাদের দেশে অনেক জায়গায়তেই গল্প প্রচলিত আছে যে বিশাল পৃথিবীটি আসলে একটি অনেক বড় একটি ষাঁড়ের শিংয়ের উপর রাখা থাকে। এই পৃথিবীর ভার বহন করতে করতে ষাঁড়টি যখন ক্লান্ত হয়ে যায় তখন সেটি তার একটি শিংয়ের উপর থেকে সরিয়ে অন্য শিংয়ের উপর নিয়ে যায়। এক শিং থেকে অন্য শিংয়ের উপর স্থানান্তর করার সময় পৃথিবীটাকে একটি ঝাঁকুনির ভেতর দিয়ে যেতে হয় এবং তখন পৃথিবীর মানুষ ভূমিকম্প অনুভব করে।
বন্যা নিয়েও আমাদের পার্বত্য চট্টগ্রামে একটি লোক কাহিনি প্রচলিত আছে। কথিত আছে পাহাড়ের উপরে থাকা গ্রামবাসীকে সতর্ক করে দেওয়ার পরেও তারা একটি ড্রাগনকে কেটে খেয়ে ফেলেছিল এবং তার শাস্তি হিসেবে গভীর রাতে মাটি ফেটে পানি বের হয়ে পুরো এলাকা পানির নিচে তলিয়ে যায় ।
কোনো কোনো এলাকায় অনাবৃষ্টির সময়য় আকাশ থেকে বৃষ্টি নামিয়ে আনার জন্য ব্যাঙের বিয়ে দেওয়ার একটি নিয়ম প্রচলিত আছে। ২০২২ সালেও যখন পর্যাপ্ত বৃষ্টি হয় নি, তখন বাংলাদেশ এবং ভারতের কিছু জায়গায় অনেক ধুমধাম করে ব্যাঙের বিয়ে দেওয়া হয়ছিল।
শিলা বৃষ্টিতে ফসলের অনেক ক্ষতি হয়। সেজন্য এই এলাকায় একধরনের গুণিন পাওয়া যেত যারা মন্ত্র পড়ে আকাশে কালো মেঘ এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় নিয়ে যেতে পারে বলে জনশ্রুতি ছিল। তাদেরকে চাষিরা আমন্ত্রণ করে নিজেদের এলাকায় নিয়ে যেত এবং প্রচণ্ড ঝড়ের মধ্যে তারা আকাশের দিকে তাকিয়ে মন্ত্র পড়ে ঝড়কে নিয়ন্ত্রণ করতো বলে স্থানীয় মানুষেরা বিশ্বাস করত!